দরপত্র আহবানের পরেও হয়নি সিডিউল বিক্রি, ফলে চিলমারীর জোড়গাছ হাটের ইজারার জন্য দরপত্র না পড়ায় সরকারী ভাবে শুরু হয় খাস খাজনা আদায়। সরকারী ভাবে খাস খাজনা আদায় শুরু হলে সঠিক নিয়মে চলবে হাটের কার্যক্রম এতে ক্রেতা ও বিক্রেতা খুশি হলেও আদায়ে অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় হতাশ স্থানীয়রা। খাজনা আদায়ের নামে চলছে জবরদস্তি, হুমকি, অতিরিক্ত টাকা নেয়াসহ রশিদ ছাড়াই চলে আদায়। বিভিন্ন অনিয়ম আর দুর্নীতির কারনে সরকারে উদ্দেশ্য ভেস্তে যাওয়াসহ সরকারী রাজস্ব ভান্ডারে আদায়ের পুরো টাকা জমা নিয়েও চলছে গুনজন।
জানা গেছে, চলতি ১৪৩২ বঙ্গাব্দে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ৫ টি হাট বাজারের ইজারার জন্য দরপত্র আহবান করা হলে বিভিন্ন সিন্ডিকেটের কারনে শুরুতে হযবরল সৃষ্টি হয়। ২টি হাট বাজার ইজারার জন্য দরপত্র পড়লেরও সময় মতো জোড়গাছ হাটসহ ৩টি হাটের দরপত্র না পড়ায় বুধাবার ১৬ এপ্রিল থেকে সরকারী ভাবে খাস খাজনা আদায় শুরু করা হয় জোড়গাছ হাটে। জোড়গাছে সপ্তাহে রবিবার ও বুধবার দুটি হাট অনুষ্ঠিত হওয়ায় এই দুই হাটে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আদেশে আদায়ের পরিচালনা করেন রমনা ইউনিয়ন ভূমি কর্তকর্তা মোঃ ফজলুল হক।
ইতিপূর্বে ইজাদারের লোকবল কর্তৃক হয়রানী হওয়া ক্রেতা ও বিক্রেতার মাঝে স্বস্তি আসে। তারা বলেন, এবার হয়তো আর হয়রানী হতে হবে না এবং সব রশিদ মুলে জমা হবে, সরকার সঠিক রাজস্ব পাবে। কিন্তু খাস খাজনা আদায়ে ইতি মধ্যে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ উঠাসহ কাঁচা বাজার, মাছ বাজার, কাঠ হাটি, পান সুপারি বাজারসহ বিভিন্ন বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের কাছে খাস খাজনা আদায়ের নামে নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা, দেয়া হচ্ছেনা কোন রশিদ। এই সকল বাজারে বিভিন্ন জনকে আদায় করতে দেখা গেছে, অনেকের গলায় ঝুলছে কাড আবার অনেকের নেই কোন পরিচয় পত্র। এই সকল আদায়কারী ব্যবসায়ীদের সাথে দুর্ব্যবহার করছেন এবং জোড়পূর্বক রশিদ ছাড়াই অতিরিক্ত খাজনা নিচ্ছেন অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
কাঠ ব্যবসায়ী দুলাল বলেন, সরকারী নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে কিন্তু রশিদ দিচ্ছেনা আদায়কারীরা, কিছু বললে ভয় দেখায়। একই অভিযোগ করে পান ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, খাজনা কত সেটিও জানি না, তবে প্রতি হাটে ৪০ টাকা করে নেয় সরকারী কাড গলায় দিয়ে আসা লোক তবে রশিদ দেয় না। চটি দোকান প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা নেয়ার কথা থাকলেও ২০ থেকে ৪০ টাকা নেয়া হচ্ছে জানিয়ে ব্যবসায়া নুর আমিন বলেন, এলা বলে সরকারী ভাবে আদায় হচ্ছে খাজনা কিন্তু রশিদ দেয় না তো।
স্থানীয় আমিনুল, ফাহমিদুল, রশিদসহ অনেকে বলেন, খাস খাজনা আদায় করা হচ্ছে সরকারী ভাবে এতেও যদি অনিয়ম আর দুর্নীতি হয়, রশিদ না দেয়া হয় তাহলে কত আদায় হচ্ছে আর রাজস্ব ভান্ডারে কত টাকা জমা হচ্ছে সেটি তো প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ এনে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, অনেক আদায়কারী রয়েছে তারা একে তো অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে সাথে বাজে ব্যবহার করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সপ্তাহে রবিবার ও বুধবার হাট বসে জোড়গাছে এটি চিলমারীর পুরাতন ও বড় হাট এই হাটের মাছ, তরকারী, কাঠ, পিয়াজসহ প্রায় দেড় থেকে দুইশত ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতি হাটবার খাজনা নেয়া হলেও সরকারী খাস খাজনা চলমান ৭টি হাটেও কোন রশিদ না দিয়েই আদায় করা হচ্ছে। ধান, পাট, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের বাজারেও খাজনা আদায় নিয়ে রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ।
আদায়ের জন্য কিছু বহিরাগতদের আপাতত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জানিয়ে রমনা ইউনিয়ন ভূমি কর্তকর্তা মোঃ ফজলুল হক বলেন, রশিদ ছাড়া আদায় হওয়া কথা নয়, আর রশিদ মুলে যা আদায় হয় সেটিই জমা হয়।
এখনো এমন অভিযোগ পাইনি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক বলেন, আমরা মনিটরিং বাড়িয়ে বিষয় গুলো ক্ষতিয়ে দেখবো। তিনি আরো বলেন, কাডধারী ও রশিদ ছাড়া যেন কাউকে কেউ খাজনা না দেয়।