শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১১:৩২ অপরাহ্ন

কেটে গেল ২৫ বছর শুধুই আশ্বাস, কথা রাখেনি কেউ!

তোফায়েল হোসেন জাকির, গাইবান্ধা / ১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫

যখন ভোট আসে তখন প্রার্থীদের বেড়ে যায় আনাগোনা। বড় গলায় প্রতিশ্রুতি দেন- ব্রিজ নির্মাণের। আর নির্বাচিত হলে দেখা মেলে না সেই জনপ্রতিনিধিদের। এভাবে কেটে গেল ২৫ বছর। কিন্তু কথা রাখেনি কেউ। শুধু আশ্বাসেই দিয়ে গেছেন এমপিরা। এভাবে ক্ষোভ জানিয়ে কথাগুলো বলছিলেন- গাইবান্ধার তারাপুর ইউনিয়নের চরখোর্দ্দা গ্রামের আমজাদ হোসেন নামের এক ভুক্তভোগী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়ন ও পাশ্ববর্তী কুড়িগ্রামের বজরা ও গুনাইগাছ ইউনিয়নের সংযোগ সড়কে সহস্রাধিক মানুষের পারাপারে একমাত্র ভরসা কাঠ-বাঁশের সাঁকো। ওই ৩ ইউনিয়নের ২৭ গ্রাম ছাড়াও গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার কয়েকটি উপজেলার সরকারি-বেসরকারি চাকুরীজীবি, স্কুল-কলেজ-মাদরাসাগামী শিক্ষার্থী, হাঁটুরে ও বিভিন্ন ব্যাবসায়ীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষজন এ পথ ধরে যাতায়াত করেন।
স্থানীয়রা বলছেন, শুরুর দিকে এ জায়গাটা বুড়াইল নদী নামে পরিচিত ছিলো। আকারে ছোট হওয়ায় কখনো বাঁশের সাঁকো আবার কখনো কাঠের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতো দুই পারের গ্রামবাসী। বুড়াইলের পাশদিয়ে ছিলো তিস্তা নদী। ২০০১ সালের দিকে তিস্তা ভেঙে বুড়াইলে সংযোগ হয়। সেই থেকে বেড়ে যায় পানির প্রবাহ বুড়াইলে। ভাঙন ড়তে থাকে নদীর প্রস্থও। আর তখন থেকে তিস্তার শাখা নদী হিসেবে পরিচিতি পায় এটি। সেতু নির্মাণের দাবিটা মূলত এখান থেকেই আরও জোরালো হয়ে উঠে। কিন্তু এখনো সেতু হয়নি। কেবলমাত্র আশ্বাসই মিলছে তাঁদের কপালে। নড়বড়ে কখনো বাঁশের আবার কখনো কাঠের সাঁকো দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে তাদের প্রতিনিয়ত। এ সাঁকো থেকে পড়ে এ পর্যন্ত দুইজন পথচারিও মারা গেছেন। মোটরসাইকেলসহ পুলিশ সদস্যও দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন এ নদীতে। আর ছোট-খাটো দুর্ঘটনা তো লেগেই আছে। সাকোঁটি ঠিক রাখতে প্রত্যেক বছর কমপক্ষে ২-৩ বার মেরামত করেন স্থানীয়রা। তবে মেরামতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সহযোগিতা দিয়ে থাকেন বলেও জানান এলাকাবাসী।
পথচারী বাবর আলী নামের এক বৃদ্ধ বলেন, সাঁকো ভাঙে আর নদীতে পানি বাড়ে তখন এখানে সাংবাদিকরা আসে। ছবি তোলে-ভিডিও করে তারা। কিন্তু ব্রিজ তো হয় না। এখন আমরা সাংবাদিকদের উপরও বিরক্ত।
কথা হয় আরেক ভুক্তভোগী নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিন বলেন, এ সাঁকোয় চলাফেরা বহুত গ্রামের। তারাপুর ইউনিয়নের খোর্দ্দা, ঘগোয়া, লাঠশালা, বৈরাগী পাড়া ও পাশ্ববর্তী জেলার উলিপুর উপজেলার বজড়া ও গুনাইগাছ ইউনিয়নের চরবিরহীম, সাধুয়া, দামারহাট, নাগড়াকুড়া ও থেথরাসহ প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে এ পথ ধরে। দিনে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার লোকের চলাচল। বহু লোকে সেতু করে দেয়ার আশ্বাস দেয় কিন্তু হয় না। তারাপুরবাসীর দুঃখ দুঃখই থাকি গেলো!
ঘগোয়া গ্রামের আবদুল মুত্তালেব মিয়া নামের এক ব্যক্তি বলেন, ইলেকশন যখন আসে তখন জনজন সবাই বলে এটা করি দেমো, ওটা করি দেমো। যেই ভোট পার হয় তখন আর কাউকে পাওয়া যায় না বাহে।
এ বিষয়ে তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামের বলেন, ওই স্থানে ব্রিজ নির্মাণ প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সাঁকোর স্থলে ব্রিজ স্থাপন করার জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে শিগগির কাজ শুরু করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ