কুড়িগ্রামে ৮দিন বয়সী এক নবজাতককে নিয়ে অভাবনীয় ঘটনা ঘটেছে। এক দম্পতির ওয়াশরুমের পাশে কান্নারত অবস্থায় শিশুটিকে প্রথমে উদ্ধার করা হয়। পরে পরিচয় না পেয়ে শিশুটিকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। এরপরই বেরিয়ে আসে নবজাতকটির উপর সংঘটিত ঘটনার প্রকৃত কারণ। পুলিশ তদন্তের পর হারিয়ে ফেলা নবজাতকের মাকে সনাক্ত করে পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার মায়ের কাছেই হস্তান্তরের মধ্যদিয়ে ঘটে টান টান উত্তেজনাকর পরিস্থিতির পরিসমাপ্তী।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বাঁশেরতল বকসীখামার গ্রামের নুর মোহাম্মদের গর্ভবতী স্ত্রী জাহানারা বেগমকে গত ১৬মে পার্শ্ববর্তী ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ১৭ মে সিজারিয়ানের মাধ্যমে তার একটি কন্যা সন্তান জন্মলাভ করে। চারদিন পর সন্তানসহ মাকে রিলিজ করা হয়। পরদিন শুক্রবার নবজাতকটি হঠাৎ বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায়। এরপর শিশুটিকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা শহরের মোবাইল ফোন টাওয়ারের পাশে মিলন মিয়া ও আসমাউল হোসনা দম্পতির বাথরুমের পিছনে কান্নারত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করে নবজাতকের পরিচয় উদ্ধার করেতে না পেরে তাকে ভূরুঙ্গামারী থানায় হস্তান্তর করা হয়। ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ সাথে সাথে শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও নার্সের তত্বাবধানে ভর্তির ব্যবস্থা করে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা বিভিন্ন ফেসবুক, অনলাইন ও পত্রপত্রিকায় প্রকশের পর নবজাতকটির ভাই শুক্রবার রাতে তার মাকে বিষয়টি খুলে বলে। ঘটনা জানার পরপরই তার মা রাত ২টার দিকে ভূরুঙ্গামারী থানায় গিয়ে উপস্থিত হন। পরে শনিবার (২৪ মে) দুপুরে ভুরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অফিসার ইনচার্জ ও সমাজসেবা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে তার মায়ের কাছে তুলে দিলে গত কয়েকদিন ধরে টানটান উত্তেজনাকর ঘটনার পরিসমাপ্তী ঘটে।
পুলিশ জানায়, জাহানারা বেগম ও আসমাউল হোসনা সম্পর্কে খালাতো বোন। জাহানারার স্বামী নুর মোহাম্মদ কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় গত শুক্রবার সকালে ঘর থেকে নবজাতক শিশুটিকে নিয়ে কাউকে কিছু না বলে ভূরুঙ্গামারীতে আসমাউল হোসনার বাড়ির পাশে গোপনে রেখে চলে আসে।
উপজেলা স্বাস্থ ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবু সাজ্জাদ মোহাম্মদ সায়েম জানান, শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় পুলিশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। বর্তমানে তার অভিভাবকের সন্ধান পাওয়া গেছে। আমরা ইউএনও, ওসি ও সমাজসেবা কর্মকর্তাদের উপস্থিততে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে শিশুটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেব।
এ বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী থানার পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল মাহমুদ জানান, শিশুটির অভিভাবকের সন্ধান পাওয়া গেছে। তার পরিচয় যাছাই বাছাই ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে তার অভিভাবকের কাছেই হস্তান্তর করা হয়েছে।