শিরোনাম
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৬:৪৪ অপরাহ্ন

আমি হিসেব পাতি করেই করেছি, তোমার বয়স অনেক কম: শিক্ষার্থীকে বেরোবি শিক্ষক

ডেস্ক নিউজ / ৭১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোঃ তানজিউল ইসলাম জীবন ও ঐ বিভাগের এক ছাত্রীর কণ্ঠ সদৃশ কথোপকথনের ৩ টি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব অডিও ছড়িয়ে পরে। ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপে শোনা যায় ঐ শিক্ষক শিক্ষার্থীকে ৩.১৬ রেজাল্ট থেকে ৩.৭০ করে দিয়েছেন এবং শিখিয়ে দিচ্ছেন কেউ জিজ্ঞাসা কি বলতে হবে।

অডিওতে, শিক্ষক ছাত্রীকে বলছেন, আমি হিসেব পাতি করেই করেছি। তোমার বয়স অনেক কম। তুমি প্রথমে চাইছিলা “স্যার আমাকে ফাস্ট করে দেন।” আমি দিতে পারতাম। কোনো দেইনি। আজকে কি জবাবটা দিতাম? ছাত্রী বলতেছেন তখন আলাদা কথা। শিক্ষক আরো বলেন, একদম সাইলেন্ট। ছাত্রী বলেন, আমি একদম চুপচাপ আছি। আমার কাছ থেকে শুনবেন না স্যার আপনার সম্পর্কে খারাপ কথা বলেছি বা অন্য কাউকে বলিছি। কারন আপনার সাথে আমার একদিনের জন্য হলেও একটা ভালো সমপর্ক ছিল।তাই কেউ জিজ্ঞাসা করলে আমি ডিপলমেটিক এনসার দিবো।

আরেকটি অডিও ক্লিপে শোনা যায়,শিক্ষক বারবার বলতেছেন তার পর বলো কি কথা ছিলো? কি করবা বলো সেটা? বারবার এগুলো বলাও ঠিক না। ছাত্রী বলছেন: স্যার মাঝখানে অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলাম পরে একটু প্রব্লেম হয়ে গিয়েছিলো। যা কথা ছিলো সেটাই হবে।

এসব অডিও ক্লিপ ফাঁস হওয়ার পর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে-বাইরে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়েছে। এছাড়াও ঐ শিক্ষক নিয়ে নানান গুঞ্জন তৈরি হয়েছে।

সাজিয়া করিম নামে এক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেছেন, ঘাড়ত্যাড়া টিচার মানা যায় কিন্তু চরিত্রহীন মানা যায়না। এই ব্যাটা যদি টিচার থেকে যায় তাহলে তো এরকম ঘটনা আরো ঘটবে।

জাহিরুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেছেন, রক্ষকই যদি হয় ভক্ষক তাহলে কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে বেরোবি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড.মোঃ তানজিউল ইসলাম জীবন বলেন, অডিও আমি এখনো শুনিনি। ছাত্ররা বললো আমার নামে অডিও ছাড়ছে একপক্ষ জোরে স্পষ্ট আর আমার কণ্ঠ নাকি শোনায় যায় না। আমি তো বলবো এটা ষড়যন্ত্র। আমার কণ্ঠ হয়তো বসে দেয়া হইছে প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে।

এরআগে সাদিয়া সুভা নামে ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা হয়, শিক্ষক বলতে আমরা বুঝি গাইড, ফিলোসফার, ছাত্রদের মাঝে মনুষ্যত্ব সৃষ্টি করা সর্বোপরি মানুষ গড়ার কারিগর। কিন্ত রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির পর এমন একজন শিক্ষকে পেলাম যেখানে শিক্ষক মানে নারীলোভী, অর্থলোভী এক নোংরা মানুষ জনাব তানজিউ ইসলাম জীবন। অসংখ্য ছাত্রী তার দ্বারা মানসিক, শারিরীক নির্যাতনের শিকার। ভবিষ্যতে আর কোন ছাত্রীকে যেন নিগৃহীত হতে না হয়, তাই কিছু লিখলাম। এইশিক্ষক যেদিন থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের পা রেখেছে তখন থেকে নিরীহ, সহজ-সরল, সাধারণ মেয়েদের টার্গেট করে। শারীরিক ভাবে কীভাবে হেনস্তা করা যায়। সে এখন পর্যন্ত অনেক মেয়েকে নম্বর দেয়ার নামে,প্রথম বানিয়ে দেওয়ার নামে,বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বানিয়ে দেওয়ার নামে কুপ্রস্তাব দেয়। আর এই ভাবে প্রত্যেক ব্যাচে তার টার্গেট এ যে মেয়ে গুলো থাকে তাদের শারীরিক নির্যাতন করেই আসছে শুরু থেকে এখন পযন্ত। আর তার এই নোংরামির বিষয় গুলো জনসম্মুখে নিয়ে আসতে ভয় পায় রানিং শিক্ষার্থীরা।কারণ তিনি ছাত্রত্ব ও নম্বর কমিয়ে দেয়ার মতো মানসিক চাপ দিতেই থাকে। শিক্ষার্থী হিসেবে নৈতিকতার জায়গা থেকে কথা বলার এখন সময় এসেছে বলে আমি মনে করি।

এঘটনায় শিক্ষক ড.তানজিউল ইসলাম জীবন রংপুর তাজহাট থানায় একটি সধারণ ডাইরি করেন। ডাইরি তে উল্লেখ করেন, আমাকে নিয়ে ফেসবুকে সাদিয়া সুভা আইডি থেকে কুরুচিপূর্ণ মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে। আমার নামে মিথ্যা তথ্য, অপপ্রচারসহ কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করা হয়েছে। চেষ্টা করেও অপপ্রচার কারীর পরিচয় শনাক্ত করতে ব্যর্থ হই। সুনির্দিষ্ট তথ্য উপাত্ত না থাকায় বিষয়টি আপাতত সাধারণ ডায়েরিভুক্ত করে রাখা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে শিক্ষক ড.তানজিউল ইসলাম জীবনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একদল আমার পিছনে অসৎ উদ্দেশ্যে শক্তিশালী অবস্থান নিয়ে উঠে পড়ে লাগছে। আর এই রেকর্ডিং টা এআই দিয়ে বানানো।

সূত্র : জনকণ্ঠ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ